18-1 : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ যিনি তাঁহার বান্দার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন এবং উহাতে তিনি বক্রতা রাখেন নাই; |
18-2 : ইহাকে করিয়াছেন সুপ্রতিষ্ঠিত তাঁহার কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করিবার জন্য, এবং মু’মিনগণ, যাহারা সৎকর্ম করে, তাহাদেরকে এই সুসংবাদ দিবার জন্য যে, তাহাদের জন্য আছে উত্তম পুরস্কার, |
18-3 : যাহাতে তাহারা হইবে চিরস্থায়ী, |
18-4 : এবং সতর্ক করিবার উহাদের যাহরা বলে আল্লাহ সন্তান গ্রহন করিয়াছেন। |
18-5 : এই বিষয়ে উহাদের কোন জ্ঞান নাই এবং উহাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না। উহাদের মুখনিঃসৃত বাক্য কী সাংঘাতিক! উহারা তো কেবল মিথ্যাই বলে। |
18-6 : উহারা এই বাণী বিশ্বাস না করিলে সম্ভবত উহাদের পিছনে ঘুরিয়া তুমি দুঃখে আত্মবিনাশী হইয়া পড়িবে। |
18-7 : পৃথিবীর উপর যাহা কিছু আছে আমি সেইগুলিকে উহার শোভা করিয়াছি, মানুষকে এই পরীক্ষা করিবার জন্য যে, উহাদের মধ্যে কর্মে কে শ্রেষ্ঠ। |
18-8 : উহার উপর যাহা কিছু আছে তাহা অবশ্যই আমি উদ্ভিদশূন্য ময়দানে পরিণত করিব। |
18-9 : তুমি কি মনে কর যে, গুহা ও রাকীমের অধিবাসীরা আমার নিদর্শনাবলীর মধ্যে বিস্ময়কর? |
18-10 : যখন যুবকরা গুহায় আশ্রয় লইল তখন তাহারা বলিয়াছিল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি নিজ হইতে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান কর এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা কর।’ |
18-11 : অতঃপর আমি উহাদেরকে গুহায় কয়েক বৎসর ঘুমন্ত অবস্থায় রাখিলাম, |
18-12 : পরে আমি উহাদেরকে জাগরিত করিলাম জানিবার জন্য যে, দুই দলের মধ্যে কোনটি উহাদের অবস্থিতিকাল সঠিকভাবে নির্ণয় করিতে পারে। |
18-13 : আমি তোমার নিকট উহাদের বৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করিতেছি : উহারা ছিল কয়েকজন যুবক, উহারা উহাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনিয়াছিল এবং আমি উহাদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করিয়াছিলাম, |
18-14 : এবং আমি উহাদের চিত্ত দৃঢ় করিয়া দিলাম; উহারা যখন উঠিয়া দাঁড়াইল তখন বলিল, ‘আমাদের প্রতিপালক। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক। আমরা কখনই তাঁহার পরিবর্তে অন্য কোন ইলাহ্কে আহ্বান করিব না ; যদি করিয়া বসি, তবে উহা অতিশয় গর্হিত হইবে। |
18-15 : ‘আমাদেরই এই স্বজাতিগণ, তাঁহার পরিবর্তে অনেক ইলাহ্ গ্রহণ করিয়াছে। ইহারা এই সমস্ত ইলাহ্ সম্বন্ধে স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করে না কেন? যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তাহার অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে?’ |
18-16 : তোমরা যখন বিচ্ছিন্ন হইলে উহাদের হইতে ও উহারা আল্লাহ পরিবর্তে যাহাদের ‘ইবাদত করে তাহাদের হইতে তখন তোমরা গুহায় আশ্রয় গ্রহণ কর। তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য তাঁহার দয়া বিস্তার করিবেন এবং তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজকর্মকে ফলপ্রসূ করিবার ব্যবস্থা করিবেন। |
18-17 : তুমি দেখিতে পাইতে উহারা গুহার প্রশস্তচত্বরে অবস্থিত, সূর্য উদয়কালে উহাদের গুহার দক্ষিণ পার্শ্বে হেলিয়া যায় এবং অস্তকালে উহাদেরকে অতিক্রম করে বাম পার্শ্ব দিয়া, এই সমস্ত আল্লাহ নিদর্শন। আল্লাহ যাহাকে সৎপথে পরিচালিত করেন, সে সৎপথপ্রাপ্ত এবং তিনি যাহাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনও তাহার কোন পথপ্রদর্শনকারী অভিভাবক পাইবে না। |
18-18 : তুমি মনে করিতে উহারা জাগ্রত, কিন্তু উহারা ছিল নিদ্রিত। আমি উহাদেরকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাইতাম ডান দিকে ও বাম দিকে এবং উহাদের কুকুর ছিল সম্মুখের পা দুইটি গুহাদ্বারে প্রসারিত করিয়া। তাকাইয়া উহাদেরকে দেখিলে তুমি পিছন ফিরিয়া পলায়ন করিতে ও উহাদের ভয়ে আতংকগ্রস্ত হইয়া পড়িতে; |
18-19 : এবং এইভাবেই আমি উহাদেরকে জাগরিত করিলাম যাহাতে উহারা পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করে। উহাদের একজন বলিল, ‘তোমরা কত কাল অবস্থান করিয়াছ?’ কেহ কেহ বলিল, ‘আমরা অবস্থান করিয়াছি এক দিন অথবা এক দিনের কিছু অংশ।’ কেহ কেহ বলিল, ‘তোমরা কত কাল অবস্থান করিয়াছ তাহা তোমাদের প্রতিপালকই ভাল জানেন। এখন তোমাদের একজনকে তোমাদের এই মুদ্রাসহ নগরে প্রেরণ কর। সে যেন দেখে কোন্ খাদ্য উত্তম ও উহা হইতে যেন কিছু খাদ্য লইয়া আসে তোমাদের জন্য। সে যেন বিচক্ষণতার সহিত কাজ করে ও কিছুতেই যেন তোমাদের সম্বন্ধে কাহাকেও কিছু জানিতে না দেয়। |
18-20 : ‘উহারা যদি তোমাদের বিষয় জানিতে পারে তবে তোমাদেরকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করিবে অথবা তোমাদেরকে উহাদের ধর্মে ফিরাইয়া লইবে এবং সেক্ষেত্রে তোমরা কখনও সাফল্য লাভ করিবে না।’ |
18-21 : এইভাবে আমি মানুষকে উহাদের বিষয় জানাইয়া দিলাম যাহাতে তাহারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহ প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতে কোন সন্দেহ নাই। যখন তাহারা তাহাদের কর্তব্য বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করিতেছিল তখন অনেকে বলিল, ‘উহাদের উপর সৌধ নির্মাণ কর।’ উহাদের প্রতিপালক উহাদের বিষয় ভাল জানেন। তাহাদের কর্তব্য বিষয়ে যাহাদের মত প্রবল হইল তাহারা বলিল, আমরা তো নিশ্চয়ই উহাদের পার্শ্বে মসজিদ নির্মাণ করিব।’ |
18-22 : কেহ কেহ বলিবে, ‘উহারা ছিল তিনজন, উহাদের চতুর্থটি ছিল উহাদের কুকুর’ এবং কেহ কেহ বলিবে, ‘উহারা ছিল পাঁচজন, উহাদের ষষ্ঠটি ছিল উহাদের কুকুর’, অজানা বিষয়ে অনুমানের উপর নির্ভর করিয়া। আবার কেহ কেহ বলিবে, ‘উহারা ছিল সাতজন, উহাদের অষ্টমটি ছিল উহাদের কুকুর।’ বল, ‘আমার প্রতিপালকই উহাদের সংখ্যা ভাল জানেন’; উহাদের সংখ্যা অল্প কয়েকজনই জানে। সাধারণ আলোচনা ব্যতীত তুমি উহাদের বিষয়ে বিতর্ক করিও না এবং ইহাদের কাহাকেও উহাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করিও না। |
18-23 : কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলিও না, “আমি উহা আগামী কাল করিব, |
18-24 : আল্লাহ ইচ্ছা করিলে’ এই কথা না বলিয়া।” যদি ভুলিয়া যাও তবে তোমার প্রতিপালককে স্মরণ করিও এবং বলিও, ‘সম্ভবত আমার প্রতিপালক আমাকে ইহা অপেক্ষা সত্যের নিকটতর পথনির্দেশ করিবেন।’ |
18-25 : উহারা উহাদের গুহায় ছিল তিনশত বৎসর, আরও নয় বৎসর। |
18-26 : তুমি বল, ‘তাহারা কতকাল ছিল তাহা আল্লাহ ভাল জানেন’, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অজ্ঞাত বিষয়ের জ্ঞান তাঁহারই। তিনি কত সুন্দর দ্রষ্টা ও শ্রোতা! তিনি ব্যতীত উহাদের অন্য কোন অভিভাবক নাই। তিনি কাহাকেও নিজ কর্তৃত্বের শরীক করেন না। |
18-27 : তুমি তোমার প্রতি প্রত্যদিষ্ট তোমার প্রতিপালকের কিতাব হইতে পাঠ করিয়া শুনাও। তাঁহার বাক্য পরিবর্তন করিবার কেহই নাই। তুমি কখনও তাহাকে ব্যতীত অন্য কোন আশ্রয় পাইবেনা। |
18-28 : তুমি নিজেকে ধৈর্য সহকারে রাখিবে উহাদেরই সংসর্গে যাহারা সকাল ও সন্ধ্যায় আহ্বান করে উহাদের প্রতিপালককে তাঁহার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করিয়া উহাদের হইতে তোমার দৃষ্টি ফিরাইয়া লইও না। তুমি তাহার আনুগত্য করিও না - যাহার চিত্তকে আমি আমার স্মরণে অমনোযোগী করিয়া দিয়াছি, যে তাহার খেয়াল - খুশির অনুসরণ করে ও যাহার কার্যকলাপ সীমা অতিক্রম করে। |
18-29 : বল, ‘সত্য তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে; সুতরাং যাহার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক ও যাহার ইচ্ছা সত্য প্রত্যাখ্যান করুক।’ নিশ্চয়ই আমি জালিমদের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি অগ্নি, যাহার বেষ্টনী উহাদেরকে পরিবেষ্টন করিয়া থাকিবে। উহারা পানীয় চাহিলে উহাদেরকে দেওয়া হইবে গলিত ধাতুর ন্যায় পানীয়, যাহা উহাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করিবে; ইহা নিকৃষ্ট পানীয়। আর জাহান্নাম কত নিকৃষ্ট আশ্রয়। |
18-30 : যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে - আমি তো তাহার শ্রমফল নষ্ট করি না - সে উত্তমরূপে কার্য সম্পাদন করে। |
18-31 : উহাদেরই জন্য আছে স্থায়ী জান্নাত যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে উহাদেরকে স্বর্ণ - কংকনে অলংকৃত করা হইবে, উহারা পরিধান করিবে সূক্ষ্ম ও পুরু রেশমের সবুজ বস্ত্র ও সেখানে সমাসীন হইবে সুসজ্জিত আসনে; কত সুন্দর পুরস্কার ও উত্তম আশ্রয়স্থল! |
18-32 : তুমি উহাদের নিকট পেশ কর দুই ব্যক্তির উপমা : উহাদের একজনকে আমি দিয়াছিলাম দুইটি দ্রাক্ষা - উদ্যান এবং এই দুইটিকে আমি খর্জুর - বৃক্ষ দ্বারা পরিবেষ্টিত করিয়াছিলাম ও এই দুইয়ের মধ্যবর্তী স্থানকে করিয়াছিলাম শস্যক্ষেত্র। |
18-33 : উভয় উদ্যানই ফলদান করিত এবং ইহাতে কোন ত্রুটি করিত না আর উভয়ের ফাঁকে ফাঁকে প্রবাহিত করিয়াছিলাম নহর। |
18-34 : এবং তাহার প্রচুর ধনসম্পদ ছিল। অতঃপর কথা প্রসঙ্গে সে তাহার বন্ধুকে বলিল, ‘ধনসম্পদে আমি তোমার অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এবং জনবলে তোমার অপেক্ষা শক্তিশালী।’ |
18-35 : এইভাবে নিজের প্রতি জুলুম করিয়া সে তাহার উদ্যানে প্রবেশ করিল। সে বলিল, ‘আমি মনে করি না যে, ইহা কখনও ধ্বংস হইয়া যাইবে; |
18-36 : ‘আমি মনে করি না যে, কিয়ামত হইবে; আর আমি যদি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবৃত্ত হই - ই তবে আমি তো নিশ্চয়ই ইহা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থান পাইব।’ |
18-37 : তদুত্তরে তাহার বন্ধু তাহাকে বলিল, ‘তুমি কি তাঁহাকে অস্বীকার করিতেছ যিনি তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন মৃত্তিকা ও পরে রক্ত হইতে এবং তাহার পর পূর্ণাঙ্গ করিয়াছেন মনুষ্য - আকৃতিতে?’ |
18-38 : ‘কিন্তু তিনিই আল্লাহ আমার প্রতিপালক এবং আমি কাহাকেও আমার প্রতিপালকের শরীক করি না।’ |
18-39 : ‘তুমি যখন তোমার উদ্যানে প্রবেশ করিলে তখন কেন বলিলে না, আল্লাহ যাহা চাহেন তাহাই হয়, আল্লাহ সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি নাই?’ তুমি যদি ধনে ও সন্তানে আমাকে তোমার অপেক্ষা নিকৃষ্টতর মনে কর - |
18-40 : ‘তবে হয়ত আমার প্রতিপালক আমাকে তোমার উদ্যান অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর কিছু দিবেন এবং তোমার উদ্যানে আকাশ হইতে নির্ধারিত বিপর্যয় প্রেরণ করিবেন; যাহার ফলে উহা উদ্ভিদশূন্য ময়দানে পরিণত হইবে। |
18-41 : ‘অথবা উহার পানি ভূগর্ভে অন্তর্হিত হইবে এবং তুমি কখনও উহার সন্ধান লাভে সক্ষম হইবে না।’ |
18-42 : তাহার ফল - সম্পদ বিপর্যয়ে বেষ্টিত হইয়া গেল এবং সে উহাতে যাহা ব্যয় করিয়াছিল তাহার জন্য আক্ষেপ করিতে লাগিল যখন উহা মাচানসহ ভূমিসাৎ হইয়া গেল। সে বলিতে লাগিল, ‘হায়, আমি যদি কাহাকেও আমার প্রতিপালকের শরীক না করিতাম!’ |
18-43 : আর আল্লাহ ব্যতীত তাহাকে সাহায্য করিবার কোন লোকজন ছিল না এবং সে নিজেও প্রতিকারে সমর্থ হইল না। |
18-44 : এই ক্ষেত্রে কতৃর্ত্ব আল্লাহরই, যিনি সত্য ও পুস্কার দানে ও পরিনাম নির্ধারনে তিনি ই শ্রেষ্ঠ। |
18-45 : উহাদের নিকট পেশ কর উপমা পার্থিব জীবনের : ইহা পানির ন্যায় যাহা আমি বর্ষণ করি আকাশ হইতে, যদ্ধারাভূমিজ উদ্ভিদ ঘন - সন্নিবিষ্ট হইয়া উদ্গত হয়, অতঃপর উহা বিশুষ্ক হইয়া এমন চূর্ন বিচুর্ন হয় যে, বাতাসে উহা লড়াইয়া লইয়া যায়। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান। |
18-46 : ধনৈশ্বর্য ও সন্তান - সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা; এবং স্থায়ী সৎকর্ম তোমার প্রতিপালকের নিকট পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং কাঙ্ক্ষিত হিসাবেও উৎকৃষ্ট। |
18-47 : স্মরণ কর, যেদিন আমি পর্বতমালাকে করিব সঞ্চালিত এবং তুমি পৃথিবীকে দেখিবে উন্মুক্ত প্রান্তর, সেদিন তাহাদের সকলকে আমি একত্র করিব এবং উহাদের কাহাকেও অব্যাহতি দিব না, |
18-48 : এবং উহাদেরকে তোমার প্রতিপালকের নিকট উপস্থিত করা হইবে সারিবদ্ধভাবে এবং বলা হইবে, ‘তোমাদেরকে প্রথমবার যেভাবে সৃষ্টি করিয়াছিলাম সেইভাবেই তোমরা আমার নিকট উপস্থিত হইয়াছ, অথচ তোমরা মনে করিতে যে, তোমাদের জন্য প্রতিশ্রুতি ক্ষণ আমি কখনও উপস্থিত করিব না।’ |
18-49 : এবং উপস্থিত করা হইবে আমলনামা এবং উহাতে যাহা লিপিবদ্ধ আছে তাহার কারণে তুমি অপরাধীদেরকে দেখিবে আতংকগ্রস্তএবং উহারা বলিবে, ‘হায়, দুর্ভাগ্য আমাদের! ইহা কেমন গ্রন্থ! উহা তো ছোট - বড় কিছুই বাদ দেয় না; বরং উহা সমস্তহিসাব রাখিয়াছে।’ উহারা উহাদের কৃতকর্ম সম্মুখে উপস্থিত পাইবে ; তোমার প্রতিপালক কাহারও প্রতি জুলুম করেন না। |
18-50 : এবং স্মরণ কর, আমি যখন ফিরিশ্তাগণকে বলিয়াছিলাম, ‘আদমের প্রতি সিজ্দা কর’, তখন তাহারা সকলেই সিজ্দা করিল ইব্লীস ব্যতীত; সে জিনদের একজন, সে তাহার প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করিল। তবে কি তোমরা আমার পরিবর্তে উহাকে এবং উহার বংশধরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করিতেছ? উহারা তো তোমাদের শত্রু। জালিমদের এই বিনিময় কত নিকৃষ্ট! |
18-51 : আকাশমণ্ডলীর ও পৃথিবীর সৃষ্টিকালে আমি উহাদেরকে ডাকি নাই এবং উহাদের সৃজনকালেও নয়, আমি বিভ্রান্তকারীদেরকে সাহায্যকারীরূপে গ্রহণ করিবার নই। |
18-52 : এবং সেই দিনের কথা স্মরণ কর, যেদিন তিনি বলিবেন, ‘তোমরা যাহাদেরকে আমার শরীক মনে করিতে তাহাদেরকে আহ্বান কর।’ উহারা তখন তাহাদেরকে আহ্বান করিবে কিন্তু তাহারা উহাদের আহ্বানে সাড়া দিবে না এবং উহাদের উভয়ের মধ্যস্থলে রাখিয়া দিব এক ধ্বংস - গহ্বর। |
18-53 : অপরাধীরা আগুন দেখিয়া বুঝিবে যে, উহারা সেখানে পতিত হইতেছে এবং উহারা উহা হইতে কোন পরিত্রাণস্থল পাইবে না। |
18-54 : আমি মানুষের জন্য এই কুরআনে বিভিন্ন উপমার দ্বারা আমার বাণী বিশদভাবে বর্ণনা করিয়াছি। মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্কপ্রিয়। |
18-55 : যখন উহাদের নিকট পথনির্দেশ আসে তখন মানুষকে ঈমান আনা এবং তাহাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা হইতে বিরত রাখে কেবল ইহা যে, তাহাদের নিকট পূর্ববর্তীদের বেলায় অনুসৃত রীতি আসুক অথবা আসুক তাহাদের নিকট সরাসরি আযাব। |
18-56 : আমি কেবল সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই রাসূলগণকে পাঠাইয়া থাকি, কিন্তু কাফিররা মিথ্যা অবলম্বনে বিতণ্ডা করে, উহা দ্বারা সত্যকে ব্যর্থ করিয়া দিবার জন্য এবং আমার নিদর্শনাবলী ও যদ্ধারাউহাদেরকে সতর্ক করা হইয়াছে সেই সমস্তকে উহারা বিদ্রপের বিষয়রূপে গ্রহণ করিয়া থাকে। |
18-57 : কোন ব্যক্তিকে তাহার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী স্মরণ করাইয়া দেওয়ার পর সে যদি উহা হইতে মুখ ফিরাইয়া নেয় এবং তাহার কৃতকর্মসমূহ ভুলিয়া যায় তবে তাহার অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে? আমি নিশ্চয়ই উহাদের অন্তরের উপর আবরণ দিয়াছি যেন উহারা কুরআন বুঝিতে না পারে এবং উহাদের কানে বধিরতা আঁটিয়া দিয়াছি। তুমি উহাদেরকে সৎপথে আহ্বান করিলেও উহারা কখনও সৎপথে আসিবে না। |
18-58 : এবং তোমার প্রতিপালক পরম ক্ষমাশীল, দয়াবান, উহাদের কৃতকর্মের জন্য যদি তিনি উহাদেরকে পাকড়াও করিতে চাহিতেন, তবে তিনি অবশ্যই উহাদের শাস্তি ত্বরান্নিত করিতেন; কিন্তুউহাদের জন্য রহিয়াছে এক প্রতিশ্রুত মুহূর্ত, যাহা হইতে উহারা কখনই কোন আশ্রয়স্থল পাইবে না। |
18-59 : ঐসব জনপদ - উহাদের অধিবাসীবৃন্দকে আমি ধ্বংস করিয়াছিলাম, যখন উহারা সীমালংঘন করিয়াছিল এবং উহাদের ধ্বংসের জন্য আমি স্থির করিয়াছিলাম এক নির্দিষ্ট ক্ষণ। |
18-60 : স্মরণ কর, যখন মূসা তাহার সঙ্গীকে বলিয়াছিল, ‘দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে না পৌঁছিয়া আমি থামিব না অথবা আমি যুগ যুগ ধরিয়া চলিতে থাকিব।’ |
18-61 : উহারা উভয়ে যখন দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে পৌঁছিল উহারা নিজেদের মৎস্যের কথা ভুলিয়া গেল; উহা সুড়ংগের মত নিজের পথ করিয়া সমুদ্রে নামিয়া গেল। |
18-62 : যখন উহারা আরো অগ্রসর হইল মূসা তাহার সঙ্গীকে বলিল, ‘আমাদের প্রাতঃরাশ আন, আমরা তো আমাদের এই সফরে ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছি।’ |
18-63 : সে বলিল, ‘আপনি কি লক্ষ্য করিয়াছেন, আমরা যখন শিলাখণ্ডে বিশ্রাম করিতেছিলাম তখন আমি মৎস্যের কথা ভুলিয়া গিয়াছিলাম? শয়তানই উহার কথা বলিতে আমাকে ভুলাইয়া দিয়াছিল; মৎস্যটি আশ্চর্যজনকভাবে নিজের পথ করিয়া নামিয়া গেল সমুদ্রে।’ |
18-64 : মূসা বলিল, ‘আমরা তো সেই স্থানটিরই অনুসন্ধান করিতেছিলাম।’ অতঃপর উহারা নিজেদের পদচিহ্ন ধরিয়া ফিরিয়া চলিল। |
18-65 : অতঃপর উহারা সাক্ষাৎ পাইল আমার বান্দাদের মধ্যে একজনের, যাহাকে আমি আমার নিকট হইতে অনুগ্রহ দান করিয়াছিলাম ও আমার নিকট হইতে শিক্ষা দিয়াছিলাম এক বিশেষ জ্ঞান। |
18-66 : মূসা তাহাকে বলিল, ‘সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হইয়াছে তাহা হইতে আমাকে শিক্ষা দিবেন, এই শর্তে আমি আপনার অনুসরণ করিব কি? |
18-67 : সে বলিল, আপনি কিছুতেই আমার সঙ্গে ধৈর্য ধারণ করিয়া থাকিতে পারিবেন না, |
18-68 : ‘যে বিষয় আপনার জ্ঞানায়ত্ত নহে সে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করিবেন কেমন করিয়া?’ |
18-69 : মূসা বলিল, আল্লাহ চাহিলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাইবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করিব না।’ |
18-70 : সে বলিল, ‘আচ্ছা, আপনি যদি আমার অনুসরণ করিবেনই তবে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করিবেন না, যতক্ষণ না আমি সে সম্বন্ধে আপনাকে কিছু বলি।’ |
18-71 : অতঃপর উভয়ে চলিতে লাগিল, পরে যখন উহারা নৌকায় আরোহণ করিল তখন সে উহা বিদীর্ণ করিয়া দিল। মূসা বলিল, ‘আপনি কি আরোহীদেরকে নিমজ্জিত করিয়া দিবার জন্য উহা বিদীর্ণ করিলেন? আপনি তো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করিলেন।’ |
18-72 : সে বলিল, ‘আমি কি বলি নাই যে, আপনি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করিতে পারিবেন না?’ |
18-73 : মূসা বলিল, ‘আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করিবেন না ও আমার ব্যাপারে অত্যধিক কঠোরতা অবলম্বন করিবেন না।’ |
18-74 : অতঃপর উভয়ে চলিতে লাগিল, চলিতে চলিতে উহাদের সঙ্গে এক বালকের সাক্ষাৎ হইলে সে উহাকে হত্যা করিল। তখন মূসা বলিল, ‘আপনি কি এক নিষপাপ জীবন নাশ করিলেন, হত্যার অপরাধ ছাড়াই? আপনি তো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করিলেন। |
18-75 : সে বলিল, ‘আমি কি আপনাকে বলি নাই যে, আপনি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করিতে পারিবেন না? |
18-76 : মূসা বলিল, ‘ইহার পর, যদি আমি আপনাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করি তবে আপনি আমাকে সঙ্গে রাখিবেন না ; আমার ‘ওযর - আপত্তির চূড়ান্ত হইয়াছে। |
18-77 : অতঃপর উভয়ে চলিতে লাগিল; চলিতে চলিতে উহারা এক জনপদের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছিয়া তাহাদের নিকট খাদ্য চাহিল; কিন্তু তাহারা তাহাদের মেহমানদারী করিতে অস্বীকার করিল। অতঃপর সেখানে তাহারা এক পতনোন্মুখ প্রাচীর দেখিতে পাইল এবং সে উহাকে সুদৃঢ় করিয়া দিল। মূসা বলিল, ‘আপনি তো ইচ্ছা করিলে ইহার জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ করিতে পারিতেন।’ |
18-78 : সে বলিল, ‘এইখানেই আপনার এবং আমার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হইল, যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করিতে পারেন নাই আমি তাহার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করিতেছি। |
18-79 : ‘নৌকাটির ব্যাপার - ইহা ছিল কতিপয় দরিদ্র ব্যক্তির, উহারা সমুদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করিত; আমি, ইচ্ছা করিলাম নৌকাটিকে ত্রটিযুক্ত করিতে; কারণ উহাদের পশ্চাতে ছিল এক রাজা, যে বলপ্রয়োগে নৌকাসকল ছিনাইয়া লইত। |
18-80 : ‘আর কিশোরটি, তাহার পিতামাতা ছিল মু’মিন। আমি আশংকা করিলাম যে, সে বিদ্রোহাচরণ ও কুফরীর দ্বারা উহাদেরকে বিব্রত করিবে। |
18-81 : ‘অতঃপর আমি চাহিলাম যে, উহাদের প্রতিপালক যেন উহাদেরকে উহার পরিবর্তে এক সন্তান দান করেন, যে হইবে পবিত্রতায় মহত্তর ও ভক্তি - ভালবাসায় ঘনিষ্ঠতর। |
18-82 : ‘আর ঐ প্রাচীরটি, ইহা ছিল নগরবাসী দুই পিতৃহীন কিশোরের, ইহার নিম্নদেশেআছে উহাদের গুপ্তধন এবং উহাদের পিতা ছিল সৎকর্মপরায়ণ। সুতরাং আপনার প্রতিপালক দয়াপরবশ হইয়া ইচ্ছা করিলেন যে, উহারা বয়ঃপ্রাপ্ত হউক এবং উহারা উহাদের ধনভাণ্ডার উদ্ধার করুক। আমি নিজ হইতে কিছু করি নাই; আপনি যে বিষয়ে ধৈর্য ধারণে অপারগ হইয়াছিলেন, ইহাই তাহার ব্যাখ্যা।’ |
18-83 : উহারা তোমাকে যুল - কারনাইন সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘আমি তোমাদের নিকট তাহার বিষয় বর্ণনা করিব।’ |
18-84 : আমি তো তাহাকে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দিয়াছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের উপায় - উপকরণ দান করিয়াছিলাম। |
18-85 : অতঃপর সে এক পথ অবলম্বন করিল। |
18-86 : চলিতে চলিতে সে যখন সূর্যের অস্তগমন স্থানে পৌঁছিল তখন সে সূর্যকে এক পংকিল জলাশয়ে অস্তগমন করিতে দেখিল এবং সে সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখিতে পাইল। আমি বলিলাম, ‘হে যুল - র্কানাইন! তুমি ইহাদেরকে শাস্তি দিতে পার অথবা ইহাদের ব্যাপার সদয়ভাবে গ্রহণ করিতে পার।’ |
18-87 : সে বলিল, ‘যে কেহ সীমালংঘন করিবে আমি তাহাকে শাস্তি দিব, অতঃপর সে তাহার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তিত হইবে এবং তিনি তাহাকে কঠিন শাস্তি দিবেন। |
18-88 : ‘তবে যে ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে তাহার জন্য প্রতিদানস্বরূপ আছে কল্যাণ এবং তাহার প্রতি ব্যবহারে আমি নম্র কথা বলিব।’ |
18-89 : আবার সে এক পথ ধরিল, |
18-90 : চলিতে চলিতে যখন সে সূর্যোদয় - স্থলে পৌঁছিল তখন সে দেখিল উহা এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হইতেছে যাহাদের জন্য সূর্যতাপ হইতে কোন অন্তরাল আমি সৃষ্টি করি নাই; |
18-91 : প্রকৃত ঘটনা ইহাই, তাহার নিকট যাহা কিছু ছিল আমি সম্যক অবগত আছি। |
18-92 : আবার সে এক পথ ধরিল, |
18-93 : চলিতে চলিতে সে যখন দুই পর্বত - প্রাচীরের মধ্যবর্তী স্থলে পৌঁছিল তখন সেখানে সে এক সম্প্রদায়কে পাইল যাহারা কোন কথা বুঝিবার মত ছিল না। |
18-94 : উহারা বলিল, ‘হে যুল - র্কানাইন! ইয়াজূজ ও মাজূজ তো পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করিতেছে। আমরা কি আপনাকে খরচ দিব যে, আপনি আমাদের ও উহাদের মধ্যে এক প্রাচীর গড়িয়া দিবেন’? |
18-95 : সে বলিল, ‘আমার প্রতিপালক আমাকে এই বিষয়ে যে ক্ষমতা দিয়াছেন, তাহাই উৎকৃষ্ট। সুতরাং তোমরা আমাকে শ্রম দ্বারা সাহায্য কর, আমি তোমাদের ও উহাদের মধ্যস্থলে এক মযবুত প্রাচীর গড়িয়া দিব। |
18-96 : ‘তোমরা আমার নিকট লৌহপিণ্ডসমূহ আনয়ন কর’, অতঃপর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হইয়া যখন লৌহস্তূপ দুই পর্বতের সমান হইল তখন সে বলিল, ‘তোমরা হাঁপরে দম দিতে থাক।’ যখন উহা অগ্নিবৎ উত্তপ্ত হইল, তখন সে বলিল, ‘তোমরা গলিত তাম্র আনয়ন কর, আমি উহা ঢালিয়া দেই ইহার উপর।’ |
18-97 : ইহার পর তাহারা উহা অতিক্রম করিতে পারিল না এবং উহা ভেদও করিতে পারিল না। |
18-98 : সে বলিল, ‘ইহা আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ। যখন আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হইবে তখন তিনি উহাকে চূর্ণ - বিচূর্ণ করিয়া দিবেন এবং আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি সত্য।’ |
18-99 : সেই দিন আমি উহাদেরকে ছাড়িয়া দিব এই অবস্থায় যে, একদল আর একদলের উপর তরঙ্গের ন্যায় পতিত হইবে এবং শিংগায় ফুৎকার দেওয়া হইবে। অতঃপর আমি উহাদের সকলকেই একত্র করিব। |
18-100 : এবং সেই দিন আমি জাহান্নামকে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত করিব কাফিরদের নিকট, |
18-101 : যাহাদের চক্ষু ছিল অন্ধ আমার নিদর্শনের প্রতি এবং যাহারা শুনিতেও ছিল অক্ষম। |
18-102 : যাহারা কুফরী করিয়াছে তাহারা কি মনে করে যে, তাহারা আমার পরিবর্তে আমার বান্দাদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করিবে? নিশ্চয়ই আমি কাফিরদের আপ্যায়নের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি জাহান্নাম। |
18-103 : বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব কর্মে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্তদের?’ |
18-104 : উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে, |
18-105 : ‘উহারাই তাহারা, যাহারা অস্বীকার করে উহাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী ও তাঁহার সঙ্গে উহাদের সাক্ষাতের বিষয়। ফলে উহাদের কর্ম নিষ্ফল হইয়া যায়; সুতরাং কিয়ামতের দিন উহাদের জন্য ওজনের কোন ব্যবস্থা রাখিব না। |
18-106 : ‘জাহান্নাম - ইহাই উহাদের প্রতিফল, যেহেতু উহারা কুফরী করিয়াছে এবং আমার নিদর্শনাবলী ও রাসূলগণকে গ্রহণ করিয়াছে বিদ্রপের বিষয়স্বরূপ।’ |
18-107 : যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের আপ্যায়নের জন্য আছে ফিরদাওসের উদ্যান, |
18-108 : সেখানে উহারা স্থায়ী হইবে, উহা হইতে স্থানান্তর কামনা করিবে না। |
18-109 : বল, ‘আমার প্রতিপালকের কথা লিপিবদ্ধ করিবার জন্য সমুদ্র যদি কালি হয়, তবে আমার প্রতিপালকের কথা শেষ হইবার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হইয়া যাইবে - আমরা ইহার সাহায্যার্থে ইহার অনুরূপ আরও সমুদ্র আনিলেও।’ |
18-110 : বল, ‘আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষই, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহ্ একমাত্র ইলাহ্। সুতরাং যে তাহার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে ও তাহার প্রতিপালকের ‘ইবাদতে কাহাকেও শরীক না করে।’ |