আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 79, আন নাযিআত (যারা টেনে বের করে)

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 79, আন নাযিআত (যারা টেনে বের করে)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা : ৪৬, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-১৪কিয়ামতের দৃশ্য।
১৫-২৬ফিরাউনের কাছে মূসার দাওয়াত। ফিরাউনের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান। দুনিয়া ও আখিরাতে ফিরাউনের কঠিন শাস্তি আল্লাহ্ ভীরুদের জন্যে একটি শিক্ষা।
২৭-৩৬আল্লাহ্ মহাশক্তিমান। কিয়ামত সংঘটিত হবেই।
৩৭-৪১কারা জাহান্নামি এবং কারা জান্নাতি?
৪২-৪৬কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে?
79-1 : শপথ সেই (ফেরেশতাদের), যারা অত্যন্ত কঠোর ও নির্মমভাবে টেনে হিচঁড়ে বের করে নেয় (কাফির ও দুষ্কৃতকারীদের প্রাণ)।
79-2 : আর শপথ সেই (ফেরেশতাদের) যারা অত্যন্ত কোমলভাবে বের করে আনে (মুমিনদের আত্মা)।
79-3 : এবং শপথ সেইসব (ফেরেশতা, কিংবা গ্রহের) যারা সাঁতরে চলে।
79-4 : আর শপথ সেইসব (ফেরেশতা, নক্ষত্র, কিংবা ঘোড়ার) যারা নির্দেশক্রমে সবেগে ধাবিত হয়।
79-5 : আর শপথ সেই (ফেরেশতাদের) যারা তাদের প্রভুর নির্দেশক্রমে কার্য সম্পাদন করে থাকে।
79-6 : সেদিন যখন (প্রথমবার শিংগায় ফুঁ দেয়া হবে), তখন (পৃথিবী, পাহাড় সবই) প্রবল ধাক্কায় বিশৃংখল হয়ে পড়বে।
79-7 : প্রথমটিকে অনুসরণ করবে আরেকটি শিংগাধবনি (তখন পুনরুত্থিত হবে সব মানুষ)।
79-8 : কতো হৃদয় সেদিন কম্পমান হবে ভয়ে।
79-9 : তাদের দৃষ্টি হবে (অপমানে) অবনমিত।
79-10 : এরা বলে: ‘‘(মরার পর) আমাদের কি আবার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে (জীবিত করে) আনা হবে?
79-11 : আমাদের হাড় - গোড় পঁচে গলে (বিনাশ হয়ে) যাবার পরও?’’
79-12 : তারা বলে: ‘তবে তো সেটা হবে এক বড় ক্ষতিকর ফিরে আসা।’
79-13 : আসল ব্যাপার হলো, ওটা হবে এক বিকট আওয়ায (দ্বিতীয় শিংগা ধ্বনি)।
79-14 : (সেই বিকট ধ্বনির) সাথে সাথেই তারা নিজেদেরকে জীবিত হাজির দেখতে পাবে এক উন্মুক্ত ময়দানে।
79-15 : তোমার কাছে মূসার হাদিস (ইতিহাস, ঘটনাবলি) পৌছেছে কি?
79-16 : যখন তার প্রভু তাকে পবিত্র তোয়া উপত্যকায় ডেকে বলেছিলেন:
79-17 : ফেরাউনের কাছে যাও, সে লংঘন করেছে সমস্ত সীমা।
79-18 : তুমি গিয়ে তাকে বলো: তুমি কি (কুফর, শিরক ও সীমালংঘন থেকে) পবিত্র হবে?
79-19 : আর আমি কি তোমাকে সঠিক পথ দেখাবো তোমার মালিকের দিকে, যাতে করে তোমার মধ্যে জাগ্রত হয় তাঁর ভয়?
79-20 : তারপর সে (মূসা) তার (ফেরাউনের) কাছে গিয়ে তাকে অনেক বড় নিদর্শন দেখালো।
79-21 : কিন্তু সে মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করলো এবং অমান্য করলো।
79-22 : তারপর সে ষড়যন্ত্র অাঁটার প্রচেষ্টায় পিছু হটলো।
79-23 : অতপর (জনতাকে) সমবেত করে ঘোষণা দিলো।
79-24 : বললো: ‘আমিই তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রভু।’
79-25 : সুতরাং আল্লাহ তাকে কঠিন শাস্তিতে পাকড়াও করলেন তার শেষ ও প্রথম সীমা লংঘনের জন্যে।
79-26 : অবশ্যি এ ঘটনার মধ্যে শিক্ষামূলক উপদেশ রয়েছে ঐ ব্যক্তির জন্যে, যে ভয় করে (আল্লাহকে)।
79-27 : তোমাদের সৃষ্টি করা বেশি কঠিন কাজ, না মহাকাশ সৃষ্টি করা? তিনিই তো সৃষ্টি করেছেন এই (মহাকাশ)।
79-28 : তিনিই অনেক উপরে উঠিয়েছেন এর উচ্চতা, অতপর তাকে ভারসাম্যপূর্ণ ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
79-29 : আর রাতকে তিনি ঢেকে দেন অন্ধকার দিয়ে, আর দিনকে বের করে আনেন আলোকিত করে।
79-30 : এরপর তিনি বিছিয়ে দিয়েছেন পৃথিবীকে।
79-31 : তার (পৃথিবীর) মধ্য থেকেই বের করেছেন তার পানি ও তৃণ - লতা (উদ্ভিদ)।
79-32 : এবং তার মধ্যে মজবুতভাবে গেড়ে দিয়েছেন পাহাড় - পর্বত।
79-33 : (এসবই করেছেন) তোমাদের ও তোমাদের পশুদের কল্যাণার্থে।
79-34 : অতপর যেদিন ঘটে যাবে মহাবিপর্যয়,
79-35 : যেদিন মানুষ খুব করে স্মরণ করবে তার (পৃথিবীর জীবনের) সা’য়ীর (ব্যস্ততা ও কৃতকর্মের) কথা,
79-36 : এবং যেদিন দর্শকদের সামনে খুলে ধরা হবে জাহিম (দোযখ),
79-37 : সেদিন (এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে যে,) পৃথিবীর জীবনে যারা সীমালংঘন করেছিল,
79-38 : এবং (আখিরাতের চাইতে) অগ্রাধিকার দিয়েছিল দুনিয়ার জীবনকে,
79-39 : তাদের আবাস হবে জাহিম (দোযখ)।
79-40 : আর যে তার মহান প্রভুর সামনে দাঁড়াবার ভয়ে ভীত ছিলো এবং নিজেকে আত্মার দাসত্বমন্দ কামনা - বাসনা থেকে বিরত রেখেছিল,
79-41 : জান্নাতই হবে তাদের আবাস।
79-42 : (হে মুহাম্মদ!) এরা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে সেই সময়টি সম্পর্কে - তা কখন অনুষ্ঠিত হবে?
79-43 : (কিন্তু) এ ব্যাপারে বলার কী জ্ঞান তোমার আছে?
79-44 : এর জ্ঞান তো শুধুমাত্র তোমার প্রভুর নিকটই সীমাবদ্ধ।
79-45 : তুমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র, তাদের জন্যে যারা তাকে (কিয়ামতকে) ভয় করে।
79-46 : যেদিন তারা সে দিনটিকে দেখতে পাবে, তারা অনুভব করবে, পৃথিবীতে তারা কাটিয়েছে একটি সন্ধ্যা, কিংবা একটি সকাল মাত্র।