আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 54, আল কামার (চাঁদ)

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 54, আল কামার (চাঁদ)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৫৫, রুকু সংখ্যা: ০৩

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-০৮প্রত্যাখ্যানকারীদের উপেক্ষা করো। একদিন তারা মাটির নীচে থেকে উঠে আসবে বিচ্ছিন্ন ফড়িংয়ের মতো।
০৯-১৬নূহের জাতির দাওয়াত প্রত্যাখ্যান এবং তাদের ধ্বংস।
১৭কুরআন সহজ, তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করার কেউ আছে কি?
১৮-২১আদ জাতি কর্তৃক রসূলকে প্রত্যাখ্যান এবং তাদের ধ্বংস।
২২উপদেশ গ্রহণ করার জন্য কুরআনকে সহজ করা হয়েছে।
২৩-৩১সামুদ জাতি কর্তৃক তাদের রসূলকে প্রত্যাখ্যান এবং তাদের ধ্বংস।
৩২কুরআনকে উপদেশ গ্রহণ করার জন্য সহজ করা হয়েছে।
৩৩-৩৯লুত জাতি কর্তৃক তাদের রসূলকে প্রত্যাখ্যান এবং তাদের ধ্বংস।
৪০উপদেশ গ্রহণ করার জন্য কুরআনকে সহজ করা হয়েছে।
৪১-৪২ফিরাউন কর্তৃক রসূলদের প্রত্যাখ্যান এবং ফিরাউনের ধ্বংস।
৪৩-৫৫মুহাম্মদ রসূলুল্লাহ সা.-কে প্রত্যাখ্যানকারীদের প্রতি সতর্ক বাণী।
54-1 : কিয়ামত করিব (নিকটবর্তী) হয়েছে এবং দ্বিখন্ডিত হয়েছে চাঁদ।
54-2 : তারা যখন কোনো নিদর্শন দেখে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে: ‘এতো আগে থেকে চলে আসা ম্যাজিক।’
54-3 : তারা প্রত্যাখ্যান করে সত্যকে এবং অনুগামী হয় খেয়াল খুশির। প্রতিটি বিষয় অবশ্যি লক্ষ্যে পৌঁছুবে।
54-4 : তাদের কাছে এসেছে এক মহাসংবাদ যাতে রয়েছে সতর্কবাণী।
54-5 : এ এক পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান (আল কুরআন)। তবে (আহবানকারীদের) সতর্কবাণী তাদের কোনো উপকারে আসেনি।
54-6 : সুতরাং তাদের উপেক্ষা করো। যেদিন আহবানকারী আহবান করবে এক অপছন্দনীয় জিনিসের দিকে।
54-7 : অপমানে চোখ নিচু করে তারা সেদিন কবর থেকে বের হয়ে আসবে বিক্ষিপ্ত ফড়িং - এর মতো।
54-8 : তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আহবানকারীর দিকে ছুটে আসবে। কাফিররা বলবে: ‘আজ এক ভয়াবহ কঠিন দিন।’
54-9 : তাদের আগে নূহের জাতিও প্রত্যাখ্যান করেছিল (তাদের রসূলকে), তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল আমাদের দাসকে এবং বলেছিল: ‘এ এক তিরস্কৃত ও ধমক খাওয়া পাগল।’
54-10 : তখন সে তার প্রভুর কাছে দোয়া করে বলেছিল: ‘আমি পরাস্ত হয়েছি, আমাকে সাহায্য করো।’
54-11 : ফলে আমরা প্রবল পানি বর্ষণের জন্যে খুলে দিয়েছিলাম আসমানের দুয়ার।
54-12 : এবং জমিন থেকে উৎসারিত করে দিয়েছিলাম বিপুল প্রস্রবন। তারপর সব পানি মিলে গেলো এক নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক।
54-13 : তখন আমরা নূহকে আরোহণ করিয়ে নিয়েছিলাম পাত ও পেরেক দিয়ে তৈরি করা নৌযানে।
54-14 : সেটি চলছিল আমাদের তত্ত্বাবধানে, যারা কুফুরি করেছিল, তাদের প্রতিফল দেয়ার জন্যে।
54-15 : আমরা সেটাকে রেখে দিয়েছি একটি নিদর্শন হিসেবে। উপদেশ গ্রহণ করার কেউ আছে কি?
54-16 : এবার ভেবে দেখো, কী যে কঠোর ছিলো আমার আযাব এবং সতর্কবাণী!
54-17 : আমরা কুরআনকে বুঝার ও উপদেশ গ্রহণ করার জন্যে সহজ করে দিয়েছি, অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?
54-18 : আদ জাতিও (রসূলকে) প্রত্যাখ্যান করেছিল। এর ফলে কেমন ছিলো আমার আযাব আর সতর্কবাণী?
54-19 : আমরা তাদের উপর পাঠিয়েছিলাম ঝড়ো বায়ু এক বিরামহীন দুর্ভাগ্যের দিনে,
54-20 : সে ঝড় মানুষকে উৎখাত করে রেখে দিয়েছিল সমূলে উৎপাটিত খেজুর গাছের কান্ডের মতো।
54-21 : ফলে কেমন ছিলো আমার আযাব আর সতর্কবাণী?
54-22 : আমরা কুরআনকে বুঝা ও উপদেশ গ্রহণ করার জন্যে সহজ করে দিয়েছি, অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?
54-23 : সামুদ জাতিও সতর্কবাণীসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছিল।
54-24 : তারা বলেছিল: ‘‘একজন মানুষকে? আমাদেরই এক ব্যক্তিকে আমরা অনুসরণ করবো? তাহলে তো আমরা পথভ্রষ্ট এবং উন্মাতাল হয়ে পড়বো।
54-25 : আমাদের মধ্যে কি কেবল তার প্রতি যিকির (অহি) নাযিল হলো? বরং সে এক উদ্ধত মিথ্যাবাদী।’’
54-26 : কালই তারা জানতে পারবে কে উদ্ধত মিথ্যাবাদী?
54-27 : আমরা তাদের পরীক্ষার জন্যে পাঠালাম এই উটনী। সুতরাং তুমি এর ব্যাপারে তাদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করো এবং সবর করো।
54-28 : তাদের তুমি সংবাদ দাও, তাদের মধ্যে পানি বণ্টন নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। নিজ নিজ ভাগের পানির জন্যে প্রত্যেকে উপস্থিত হবে পালাক্রমে।
54-29 : তারপর তারা তাদের এক সাথিকে ডাকলো, সে দায়িত্ব গ্রহণ করলো এবং ওটিকে হত্যা করে ফেললো।
54-30 : এবার দেখো, কী কঠোর ছিলো আমার আযাব এবং আমার সতর্কবাণী!
54-31 : আমরা তাদের প্রতি পাঠিয়েছিলাম এক প্রচন্ড শব্দের আযাব, তাতেই তারা হয়ে পড়লো শুকনো মোড়ানো খড়ের কাঁদির মতো।
54-32 : আমরা কুরআনকে বুঝা ও উপদেশ গ্রহণ করার জন্যে সহজ করেছি, অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?
54-33 : লুতের কওমও সতর্কবাণীসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছিল,
54-34 : আমরা তাদের উপর পাঠিয়েছিলাম পাথর বহনকারী প্রচন্ড ঝড়, তবে লুত পরিবারকে রক্ষা করেছিলাম। তাদের আমরা উদ্ধার করেছিলাম সেহেরীর সময় (শেষ রাত),
54-35 : আমাদের পক্ষ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ হিসেবে। যারা শোকর আদায় করে, আমরা এভাবেই তাদের পুরস্কৃত করি।
54-36 : সে (লুত) তাদের সতর্ক করে দিয়েছিল আমাদের কঠোর শাস্তি সম্পর্কে। কিন্তু তারা সতর্কবাণী নিয়ে সন্দেহ করে এবং হয় বিতর্কে লিপ্ত।
54-37 : তারা লুতের কাছে তার মেহমানদের দাবি করে অসৎ উদ্দেশ্যে। তখন আমরা তাদের দৃষ্টিশক্তি লোপ করে দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম: স্বাদ গ্রহণ করো আমার আযাবের এবং সতর্কবাণী (অমান্য করার) পরিণতির।
54-38 : একেবারে বেন বেলায়ই তাদের আঘাত করে এক অপ্রতিরোধ্য আযাব।
54-39 : ‘স্বাদ গ্রহণ করো আমার আযাব আর সতর্ক বাণী (অমান্য করার) পরিণতির।’
54-40 : আমরা কুরআনকে বুঝা ও উপদেশ গ্রহণ করার জন্যে সহজ করেছি, অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?
54-41 : ফেরাউন সম্প্রদায়ের কাছেও এসেছিল আমাদের সতর্কবাণী।
54-42 : তারা আমাদের সবগুলো নিদর্শনই প্রত্যাখ্যান করেছিল, তখন আমরা তাদের পাকড়াও করি পরাক্রমশালী শক্তিধরের পাকড়াও।
54-43 : তোমাদের কাফিররা কি তাদের চেয়ে উত্তম? নাকি পূর্ববর্তী কিতাবে তোমাদের অব্যাহতি লাভের কোনো সময় আছে?
54-44 : নাকি তারা বলে: ‘আমরা একটি সংঘবদ্ধ অপরাজেয় দল?’
54-45 : এই সংঘবদ্ধ দল তো শীঘ্রি পরাজিত হবে এবং পেছনে ফিরে পালাবে।
54-46 : তাদের আসল শাস্তির প্রতিশ্রুত সময় হলো কিয়ামত। কিয়ামত হবে অধিকতর কঠিন এবং অধিকতর তিক্ত।
54-47 : নিশ্চয়ই অপরাধীরা রয়েছে বিভ্রান্তিতে এবং উন্মাতাল অবস্থায়।
54-48 : যেদিন তাদের উপুড় করে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামে, সেদিন তাদের বলা হবে: স্বাদ গ্রহণ করো জাহান্নামের যন্ত্রণার।
54-49 : আমরা প্রতিটি বস্ত্ত সৃষ্টি করেছি পরিমাণ মাফিক।
54-50 : আমাদের নির্দেশ তো এক কথায়ই সম্পন্ন হয়ে যায় চোখের পলকের মতো।
54-51 : আমরা (ইতোপূর্বে) তোমাদের অনুরূপ দলগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছি। (সুতরাং) উপদেশ গ্রহণ করার কেউ আছে কি?
54-52 : তারা যা করছে প্রতিটি জিনিসই রয়েছে রেকর্ডে,
54-53 : প্রতিটি ক্ষুদ্র এবং বৃহৎ (বিষয়ই) রেকর্ড করা রয়েছে।
54-54 : নিশ্চয়ই মুত্তাকিরা থাকবে জান্নাত এবং নদ নদী নহরে,
54-55 : যথাযোগ্য আসনে মহাশক্তিধর সর্বময় কর্তৃত্বের মালিকের কাছে।